গত ১ লা জুলাই ২২ইং থেকে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা বার্ষিক আয়কর রিটার্ন দিতে পারছেন। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৫ মাস রিটার্ন দেওয়া যাবে। প্রতিবছরই বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের রিটার্ন দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। এবারও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেমন ৩৮ ধরনের সেবায় রিটার্ন বাধ্যতামূলক, বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত হ্রাস, রিটার্ন জমায় দণ্ড শিথিল করা, আবার বকেয়া থাকলে পরিষেবা-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ইত্যাদি। আবার প্রত্যাশা থাকা সত্ত্বেও করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি। এবার দেখা যাক কোথায় কী ধরনের পরিবর্তন এল।
• করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি :
কয়েক মাস ধরেই মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের ঘরে আছে। মধ্যবিত্তসহ সব শ্রেণির খরচ বেড়েছে। মধ্যবিত্ত করদাতারা প্রত্যাশা করেছিলেন, এবার করমুক্ত আয়সীমা কিছুটা বাড়ানো হবে। এতে তাঁদের কিছুটা সাশ্রয় হবে।
কিন্তু অর্থমন্ত্রী তা করেননি। খরচ করমুক্ত আয়সীমা আগের মতোই বার্ষিক তিন লাখ টাকা রইল। ফলে যাঁদের করযোগ্য আয় তিন লাখ টাকার বেশি থাকবে, তাঁদের কর দিতেই হবে। মনে রাখবেন, সাধারণ করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ টাকা। এ ছাড়া নারী, ৬৫ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণ করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা। আর প্রতিবন্ধী করদাতাদের সাড়ে চার লাখ টাকা, গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতাদের বার্ষিক আয়ের পৌনে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত কর নেই। প্রতিবন্ধী সন্তানের মা-বাবা বা আইনি অভিভাবকেরা তাঁদের আয়ে করমুক্তসীমায় আরও ৫০ হাজার টাকা ছাড় পাবেন। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের করমুক্ত আয়সীমা করা হয়েছে সাড়ে তিন লাখ টাকা।
• রিটার্ন জমা ছাড়া সেবা মিলবে না :
প্রস্তাবিত বাজেটে ৩৮ ধরনের সেবা পেতে হলে রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তা না হলে যেসব প্রতিষ্ঠান এই সেবা দেবে, তাদের ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। যেমন পাঁচ লাখ টাকার বেশি ব্যাংকঋণ পাওয়া, পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনা, ক্রেডিট ব্যবহার, অনলাইনে বেচাকেনার ব্যবসা, রাইড শেয়ারিংয়ে মোটরগাড়ি দেওয়া—এমনকি সন্তানকে ইংরেজি সংস্করণে (ইংলিশ ভার্সন) পড়াশোনা করালেও রিটার্ন জমা দিতে হবে। তাই ভবিষ্যতে এসব সেবা পেতে এবার রিটার্ন দিতেই হবে। এ ছাড়া গাড়ির মালিক, অভিজাত ক্লাবের সদস্য, কোম্পানির পরিচালক, বণিক সংগঠনের সদস্য, পৌর থেকে জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত প্রার্থী হলেও রিটার্ন দিতে হবে।
• বিনিয়োগের আগে চিন্তা করুন :
গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত আপনি আয়ের কত অংশ বিনিয়োগ করেছেন, তা হিসাব করে রাখুন। এবার কর রেয়াত পাওয়ার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সুবিধা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, বার্ষিক আয়ের ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবেন। আর ধনী-গরিব সবাই ১৫ শতাংশ কর রেয়াত পাবেন। রিটার্ন তৈরির সময় বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
• অতীতের জরিমানা মওকুফ :
আপনি কয়েক বছর আগে জরুরি কাজে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) নিয়েছেন। কিন্তু প্রতিবছর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক হলেও কোনোবারই রিটার্ন দেননি। এবার এমন টিআইএনধারীর জন্য বিরাট সুযোগ এসেছে। যাঁরা অতীতে টিআইএন নিয়ে রিটার্ন দেননি, তাঁরা এবার রিটার্ন দিলে কোনো জরিমানা গুনতে হবে না। সবাইকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় আনা হয়েছে। বর্তমানে ৭৬ লাখ টিআইএনধারী আছেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র ২৬ লাখ টিআইএনধারী সারা বছরের আয়-ব্যয়ের তথ্য জানিয়েছেন রিটার্ন দেন। বাকি ৫০ লাখ টিআইএনধারীর জন্য এবার বিরাট সুযোগ এল।
আপনার আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে আমাদের সহযোগিতা নিতে যোগাযোগ করুন :
Whatsapp:+880 1963 953 888
Email : info@mscbd.net
Website : www.mscbd.net